May 19, 2024

কথা হোক ঘরে বাইরে

জ্যোতি বসু একটা নাম নয়, সংসদীয় রাজনীতিতে একটি পতাকা

জ্যোতি বসু একটা নাম নয়, সংসদীয় রাজনীতিতে একটি পতাকা জ্যোতি বসু যে দীর্ঘদিন সংগঠনের দায়িত্বও সামলেছেন, তা বিস্মরণ হয়েছে অনেকের। জ্যোতি বসু দীর্ঘ ১০বছর দলের রাজ্য সম্পাদক থাকার পাশাপাশি বিধানসভায় বিরোধী দলনেতার পদে আসলে সংগঠক জ্যোতি বসু চাপা পড়ে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিরাট ছায়ায়। ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের ইতিহাস চর্চা করলে দেখা যায়, ব্রিটিশ আমলে এই উপমহাদেশের বহু ছাত্রর কমিউনিজমের হাতেখড়ি হয়েছিল লন্ডনে, ব্রিটিশ কমিউনিস্ট পার্টির নেতা রজনীপাম দত্ত, ব্রাডলে প্রমুখের হাতে। সেই সময় ওই রাজনৈতিক আড্ডাকে বলা হত লন্ডন মজলিস। আপনি মানুন বা না মানুন, শুধু বলা যায়, এটা চাড্ডিখানি কথা নয়। আপনি পছন্দ করতে পারেন। অপছন্দ করতে পারেন। কিন্তু বাঙালির রাজনৈতিক ইতিহাস লিখতে হলে জ্যোতি বসুকে অস্বীকার করতে পারবেন না কেউই। দিব্যজ্ঞান নিয়ে মাথাব্যথা ছিল না। ছিল তীব্র কাণ্ডজ্ঞান। কথা বলেন কম। হাসেন আরও কম। দামী স্কচ খেতে ভালবাসতেন। মার্কসবাদ-লেনিনবাদের বই পড়ার চেয়ে পছন্দ করতেন সেক্সপীয়র পড়তে, ক্লাসিক সাহিত্য পড়তে। নিজে প্রচুর বই পড়তেন, নব্বই বছর বয়সেও নোম চমস্কি নতুন বই কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীকে উপহার পাঠাতে পারেন। বাংলা বলা বা লেখার চেয়ে বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করতেন ইংরেজি লিখতে বা বলতে। প্রখর নজর ছিল সতীর্থদের, সঙ্গীদের স্বাচ্ছন্দের প্রতি। হ্যাঁ বা না-তে উত্তর দিতে পছন্দ করতেন। সেই জ্যোতি বসুর বাস্তব বুদ্ধির ধারেকাছে বাংলা বা ভারতের কোনও কমিউনিস্ট নেতা কোনও দিন আসতে পারেননি। তাই জ্যোতি বসু একটা নাম নয়, সংসদীয় রাজনীতিতে একটি পতাকা।