November 21, 2024

কথা হোক ঘরে বাইরে

নতুন রাজ্যের দাবি ছাড়া বাংলায় রাজনীতি করার আর কোনো ইস্যু নেই

একবার টুকরো হয়েছিল তার বীভৎস ও দুঃসহ জিঘাংসাস্মৃতি এখনও মুছে যায়নি। ফের মাথাচারা দিয়ে উঠেছে ভাগাভাগির চক্রান্ত। লোকসভা এবং বিধানসভা উপনির্বাচনে পদ্মশিবিরের ভরাডুবির পর বিজেপির রাজ্য সভাপতি ও কেন্দ্রীয় উত্তর–পূর্ব ভারত উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার চিঠি লিখে প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাব দিয়েছেন, উত্তরবঙ্গের অবহেলিত আট জেলাকে উন্নয়ন করার লক্ষ্যে উত্তর–পূর্ব ভারতের সঙ্গে যুক্ত করা হোক। উল্লেখ্য, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ এবং নতুন করে তৈরি হওয়া কালিম্পং হল উত্তরবঙ্গের আট জেলা। যদিও উত্তরবঙ্গ নামে প্রশাসনিকভাবে কোনো বঙ্গ বা বাংলা নেই, সেখানে বেশিরভাগই তপশিলি জাতি উপজাতির বাস। এছাড়া একাধিক জেলায় রয়েছে নেপাল, ভুটান এবং বাংলাদেশের সীমান্ত। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির গেটওয়েতে পরিণত হয়েছে।

বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, বিজেপি একদিকে রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ঘাঁটার চেষ্টা যেমন করছে একই সঙ্গে সেই ঘোলাটে পরিস্থিতির ফায়দা নিতে চাইছে। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি তারপর ছ’টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে গোহারা হওয়াতে তারা যে বাংলার রাজনীতিতে ক্রমাগত ব্যর্থ এবং গুরুত্বহীন তা প্রমানিত। কিন্তু সবথেকে বড় দলটি তো হাল ছেড়ে দিতে পারে না, তাই রাজ্য রাজনীতিতে নিজেদের অস্তিত্ব জিইয়ে রাখতে নতুন রাজ্যের ধুয়ো তুলে বিতর্কের সৃষ্টি করে আলোচনায় থাকতে চাইছে। নতুন রাজ্যের দাবির মধ্যে আছে সংখ্যালঘু মুসলিম অধ্যুষিত জেলা নিয়ে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়া। যার মধ্যে দিয়ে তাদের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি পোক্ত করার একটা প্রচেষ্টা থেকেই যায়। চারশো আসন পারের স্বপ্ন দেখেছিলেন মোদী, বাস্তবে ফল হলো উল্টো। মোদী ক্ষমতায় থাকতেই জোট সরকার গড়তে বাধ্য হয়েছেন। অন্যদিকে বাংলায় আসন ১৮ থেকে কমে হয়েছে ১২। তৃণমূলের দুর্নীতিকে ইস্যু করেও কোনো কাজ হলনা। আর এখন বাংলায় বিজেপির হাতে আর নতুন কোনো ইস্যু নেই। তাই নতুন রাজ্যের দাবি তুলে পরিস্থিতি গরম করা ছাড়া আর কোনো রাস্তা নেই।